মুক্তির মিছিল,  ঢাকা,  মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩ :   মুন্সিগঞ্জে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের (বিএইচএল) কারখানাটির একটি কক্ষ বিশেষভাবে তৈরি। সেখানে ধুলাবালু প্রবেশ করতে পারে না। এই কক্ষে সংযোজন করা হয় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন।

কারিগরি দিক দিয়ে সবচেয়ে জটিল হলো ইঞ্জিন তৈরি। এ ক্ষেত্রে জাপানিরা সিদ্ধহস্ত। তবে বাংলাদেশে মোটরসাইকেলশিল্পের ছয় বছরের যাত্রায় ইঞ্জিন সংযোজন শুরু হয়েছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, এভাবে সংযোজন দিয়েই ভারতে মোটরসাইকেলশিল্প শুরু হয়েছিল। এখন সেখানে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগে গড়ে ওঠা কারখানায় মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিন তৈরি হয়। বাংলাদেশেও একদিন মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।

দেশে সম্পূর্ণ তৈরি অবস্থায় (সিবিইউ) মোটরসাইকেল আমদানি করলে মোট শুল্ক–কর দাঁড়ায় ১৫৩ শতাংশের মতো। আর সম্পূর্ণ বিযুক্ত (সিকেডি) অবস্থায় আমদানি করলে করভার ৮৯ শতাংশ। উৎপাদনকারীর দুটি শ্রেণিবিভাগ রয়েছে। প্রথম শ্রেণিতে থাকা কারখানাকে মোটরসাইকেলের চেসিস (কাঠামো) ও কাঁচামাল থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরি করতে হয়। তাদের ক্ষেত্রে আমদানিতে মোট করভার ৩০ শতাংশের মতো। দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকা কারখানাকে চেসিস ও একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ তৈরি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে করভার ৪২ শতাংশের মতো।

বাংলাদেশে হোন্ডার কারখানায় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সংযোজনের কাজ উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। এখন তারা তিনটি মডেলের ইঞ্জিন সংযোজন করছে। ইঞ্জিন সংযোজন করে নিটল-নিলয় গ্রুপ, যারা ভারতের হিরো ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনে হিরো মোটোকর্পের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কারখানা করেছে। একমাত্র দেশীয় ব্র্যান্ড রানারও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সংযোজন করে। আরও কেউ কেউ কোনো কোনো মডেলের ইঞ্জিন সংযোজন করে।

অবশ্য ইঞ্জিন সংযোজনকারী কারখানাগুলো বলছে, গত ২১ মে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ইঞ্জিন সংযোজনে বাড়তি কর–সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ তৈরি ইঞ্জিন আমদানি করলে শুল্ক–কর হার ৫৯ শতাংশ। সংযোজনের ক্ষেত্রে করহার ছিল ২৯ ও ৪৩ শতাংশ (উৎপাদনকারীর শ্রেণিভেদে)। এখন সব ক্ষেত্রে শুল্ক–কর হার সমান করা হয়েছে।

একটি মোটরসাইকেল কোম্পানির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, সিবিইউ ও সিকেডি ইঞ্জিনের শুল্কহার যদি সমান হয়, তাহলে দেশে সংযোজনে উৎসাহ থাকবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here