বুধবার বিকেলে উপজেলার ধানগড়া বাজারে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পাঠাগার–সংলগ্ন এলাকায় বকুল হোসেনের অস্থায়ী দোকানে কথা হয়। তিনি বলেন, তাঁর পড়ালেখা বেশি দূর এগোয়নি। ছোটবেলা থেকেই হোটেল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। ফুলজোড় নদীর ভাঙনে সেই দোকান বিলীন হয়ে যায়। ধানগড়া গ্রামীণ ব্যাংক শাখার পশ্চিমে রাস্তার ধারে শিঙাড়া, পুরি ও পেঁয়াজু বিক্রি শুরু করেন। নানা কারণে দোকানটি আগের জায়গা থেকে সরিয়ে বর্তমান জায়গায় নিয়ে আসতে হয়েছে। এ ব্যবসায় কেটে গেছে ৩০ বছরের বেশি সময়।
অল্প পুঁজিতে ছোট ব্যবসা করেন বকুল। সব বয়সী মানুষ তাঁর ক্রেতা। তাঁর শিঙাড়া, পুরি আর পেঁয়াজু খেতে আসেন দূরদূরান্তের মানুষ। মেহেদী হাসান নামের একজন বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই বকুলের শিঙাড়া, পুরি ও পেঁয়াজুর ভক্ত আমি। একই রকম দাম থাকায় এখনো এসব খাই।’
প্রথম যখন এ ব্যবসা শুরু করেন, তখন ময়দা সের দরে বিক্রি হতো। প্রতি সের ময়দার দাম ছিল ছয় থেকে সাত টাকা। আর তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৬ থেকে ১৮ টাকা। তখন তিনটি শিঙাড়া একসঙ্গে কিনলে দাম নেওয়া হতো পাঁচ টাকা। সবকিছুর দাম বাড়লেও বাড়েনি তাঁর শিঙাড়া, পুরি আর পেঁয়াজুর দাম।
বকুল হোসেন আরও বলেন, প্রথম যখন এ ব্যবসা শুরু করেন, তখন ময়দা সের দরে বিক্রি হতো। প্রতি সের ময়দার দাম ছিল ছয় থেকে সাত টাকা। আর তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৬ থেকে ১৮ টাকা। তখন তিনটি শিঙাড়া একসঙ্গে কিনলে দাম নেওয়া হতো পাঁচ টাকা। পুরি ও পেঁয়াজুর দামও ছিল একই রকম। সবকিছুর দাম বাড়লেও বাড়েনি তাঁর শিঙাড়া, পুরি আর পেঁয়াজুর দাম। তবে আকারে ছোট হয়ে এসেছে শিঙাড়া, পেঁয়াজু। কারণ, বর্তমানে এক কেজি ময়দা ৬৫ টাকা, এক লিটার খোলা তেল ১৬৮ টাকা।
দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় অপর দুই ক্রেতার সঙ্গে। তাঁরা জানান, অনেকবার এ দোকানের সুস্বাদু শিঙাড়া, পুরি ও পেঁয়াজু খেয়েছেন। স্বাদ আর দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় বকুলের তৈরি পুরি, পেঁয়াজু ও শিঙাড়ার কদর আগের মতোই আছে।
ঢাকায় পড়ালেখা করেন নেহাল হাসান। বাড়ি এলে দোকানটির মজার এসব খাবার খান তিনি। বন্ধুদের নিয়েও খেতে আসেন।
স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বকুল হোসেনের সংসার। বড় ছেলে সজল হোসেন বাসচালক। ছোট ছেলে রিপন হোসেন স্থানীয় সরকারি বেগম নূরুননাহার তর্কবাগীশ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্র। অবসরে সে বাবার কাজে সহযোগিতা করে আর ফুটবল খেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, ছোট মেয়ে বাড়ির কাজে মাকে সহায়তা করে।
বকুল হোসেন একবার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করেছিলেন, তবে জিততে পারেননি। বকুল বলেন, নির্বাচনে জিততে পারেননি বলে হতাশ হননি। জীবনের প্রায় পুরো সময়টাই চুলার আগুনের আঁচে কাটল। আনন্দে ও আগুনের কাছাকাছি থাকেন বলে হয়তো শরীরে অসুখবিসুখ কম। যত দিন বাঁচবেন, এ ব্যবসা চালিয়ে যেতে চান।